Advertisements

সবুজ অকৃত্রিম পাহাড়ি কন্যা ভাটিয়ারী

পাহাড় ঘেরা নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি ভাটিয়ারী দেখলে কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতাটি মনে পড়ে যায়।
বাংলার রূপ দেখিয়াছি,

তাই আমি পৃথিবীর রূপ দেখিতে চাহি না আর…

চট্টগ্রাম শহরের সিটি গেইট থেকে সাত কিলোমিটার দক্ষিণে ভাটিয়ারী ইউনিয়নের অবস্থান।

এ পথে আসলে সহসাই আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে উঠবে যে কারো মন। চলতি পথে রয়েছে ভিন্নধর্মী বিনোদনের ব্যবস্থাও। সবকিছু মিলিয়ে এটি হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের সুন্দরতম রাস্তাগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি ভ্রমণ পথ।

রাস্তার শুরুতেই পড়বে উঁচু-নিচু মসৃণ পথ, পাহাড়ের ভাঁজে জুম চাষ, সেনাবাহিনীর ট্রেনিং গ্রাউন্ড, পাহাড় জুড়ে বৃক্ষরাজির নৈসর্গিক সৌন্দর্য, পার্ক, গলফ গ্রাউন্ডসহ নানান আয়োজন। চলতে চলতে কখনো দেখা মিলবে লাল সবুজ ট্রেনের সঙ্গে। রয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দ্বারা পরিচালিত সর্ব সাধারণের জন্য উন্মুক্ত ‘সানসেট পয়েন্ট’, যার মাধ্যমে আপনি পাহাড়ে দাঁড়িয়ে উপভোগ করতে পারবেন বঙ্গোপসাগরের সূর্যাস্ত।

ভাটিয়ারী পাহাড়ের মধ্যে আছে অপূর্ব সুন্দর এক লেক। যার পরিচ্ছন্ন সবুজাভ পানি আপনাকে করবে বিমোহিত। চাইলে একটু বোট রাইডও করে নিতে পারেন।

কিছু দূর এগোলেই দেখা মিলবে টিলার। সেই টিলার বাঁকে দেখা মিলবে ‘ভাটিয়ারী গলফ অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাব’। ‘ভাটিয়ারী গলফ এ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাব’ বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্লাবগুলোর মধ্যে অন্যতম। এখানেও ঘুরতে পারবেন অনুমতি সাপেক্ষে।

রাস্তা ধরে যেতে যেতে চোখে পড়বে আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন আদিবাসী গ্রাম, পাহাড়ি জুম চাষ।

রাস্তার শেষ দিকে দেখে নিতে পারেন পাহাড়ি প্রকৃতিকে সুসংবদ্ধ করে তৈরি করা আধুনিক ইকোপার্ক ‘ক্যাফে ২৪’। এতে রয়েছে কৃত্রিম ঝর্ণা, পাহাড়ি লেক, বোট রাইডের ব্যবস্থা, সেনাবাহিনীর ট্রেনিং অ্যাকটিভিটি, ছাঁটাই করা ঘাসের মসৃণ সবুজ মাঠে বসার জন্য পাতা বেঞ্চ, ট্রেন রাইড।

তবে মসৃণ আর উঁচু-নিচু রাস্তা হওয়ায় আপনাকে সর্বোচ্চ নিরাপদে গাড়ি চালাতে হবে। না হলে যেকোনো মূহুর্তে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে।

নিরাপত্তাজনিত কারণে হাটহাজারীর এ সড়কে রাত ৮টার পর সাধারণ মানুষের জন্য চলাচল নিষিদ্ধ।

এখানে নীল আকাশ সবুজ পাহাড়ের সঙ্গে মিশেছে। লেকের পানিতে সাদা বক আর অন্য পাখিদের কলকাকলিতে মুখরিত এ ভাটিয়ারী।

নিজেকে যদি প্রকৃতির মধ্যে বিলীন করে দিতে চান, যদি পরিবার পরিজন নিয়ে কিছুটা সময় সতেজ অক্সিজেন কিংবা হিম বাতাসে সবুজের বুকে হারাতে চান, যান্ত্রিকতার বেড়াজাল থেকে বেরিয়ে মুক্ত পাখির মতো উড়তে চান, কিংবা কিছুটা সময় নীরবে নিভৃতে নগ্ন পায়ে সবুজ ঘাসের আস্তরণে প্রিয় মানুষটির হাতে হাত রেখে চলতে চান, তবে আপনাকে অবশ্যই আসতে হবে সীতাকুণ্ড ভাটিয়ারী মিলিটারি একাডেমিতে অবস্থিত নিরিবিলি নিরাপদ মনোরম এই পাহাড়ের বুকে।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp

Related Posts

Advertisements
Advertisements

Recent Posts

Popular Posts

No Content Available
Advertisements
Advertisements